
দেশের অনেক মানুষ এবং নেতা স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছিলেন। সেই নায়কদের একজনের নামও ছিল ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস’। তিনি তাঁর বীরত্বপূর্ণ কর্মের দ্বারা ইংরেজ সরকারের ভিত্তি কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। যতদিন তারা বেঁচে ছিলেন ব্রিটিশ শাসকরা শান্তিতে ঘুমাতে পারেননি। তিনি ছিলেন ব্রিটিশদের দ্বারা করা অত্যাচার ও অবিচারের চূড়ান্ত বিরোধী। তিনি নিজেই ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ তৈরি করেছিলেন এবং এটিকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিলেন।
নেতাজি জন্মগ্রহণ করেছিলেন 23 সে জানুয়ারী 1897 সালে ওড়িশার ‘কটক শহরে । তাঁর বাবার নাম ছিল ‘জানকিনাথ বোস’। তিনি ছিলেন কটক শহরের একজন বিখ্যাত আইনজীবী। তাঁর মাতার নাম ছিল ‘প্রভাবতী’। তিনি একজন স্মার্ট গৃহিনী ছিলেন।
নেতাজীর চৌদ্দ ভাইবোন ছিল, যার মধ্যে তিনি নবম। নেতাজি শৈশব থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি ‘ইংল্যান্ড’ থেকে ics পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। তবে দেশের প্রতি তার কর্তব্য অনুধাবন করে তিনি ১৯২১ সালে পদত্যাগ করেন।তাঁর দেশ ও দেশবাসীর প্রতি তাঁর প্রচুর শ্রদ্ধা ছিল। কলেজে তিনি তার অধ্যাপক অটানকে চড় মারলেন কারণ তিনি ভারতীয়দের জন্য অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করতেন। এর পরে আর কখনও সে ফিরে তাকাতে হয়নি এবং ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতার আগুনে।
তিনি স্বাধীনতার পথে ‘চিত্তরঞ্জন দাশ’ দ্বারা পরিচালিত ছিলেন। তিনি দাশজির ছাত্র-ছায়ায় রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। তার ক্রিয়াকলাপের কারণে, কংগ্রেসে তাঁর নামটি অত্যন্ত সম্মানের সাথে নেওয়া শুরু হয়েছিল। নেতাজী ১৯৩৮ এবং ১৯৩৯ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। গান্ধীজী তাঁর কাজের পদ্ধতিতে সন্তুষ্ট হননি। গান্ধীজির বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি সর্বসম্মতভাবে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। নেতাজি সবসময়ই ইংরেজ সরকারের নজরে ছিলেন। এ কারণে বহুবার নেতাজিকেও জেল কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ইংরেজী সরকার তাদের নজরবন্দী করে রাখে।
ব্রীটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে নেতাজি আফগানিস্তানের পথ ধরে আফগানিস্তানে পৌঁছে জার্মানি চলে গেল। সেখানে তিনি তার স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য হিটলারের সাহায্য চেয়েছিলেন,। তিনি যখন জার্মানিতে সহায়তা না পাওয়ায় তিনি জাপানে যান। তিনি তার স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য জাপানে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ‘তোজো’ এর সাহায্য চেয়েছিলেন।১৯৪২ সালের ৫ জুলাই জাপানি কারাগারে যুদ্ধে ধরা পড়া ভারতীয় সৈন্যদের মুক্তি দিয়ে তারা ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ তৈরি করেছিলেন। এটি এই সুপারহিরোর বৃহত্তম সাফল্য ছিল। এই সেনাবাহিনী অনেক জায়গাও জয় করেছিল। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে আজাদ হিন্দ ফৌজ সফল হতে পারেনি। নেতাজির স্লোগান পুরো ভারতজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। তাঁর স্লোগান ছিল “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাকে স্বাধীনতা দিব” “আজও প্রত্যেক ভারতীয়ের মুখে এই স্লোগান শোনা যায় ।
সময় সমর্থন করেনি, নইলে ভারত আর ও অনেক আগেই স্বাধীনতা অর্জন করত। তিনি রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন, যা আজ অবধি কেউ জানতে পারেনি। তবে তাঁর অবদান পুরো বিশ্বকে জানিয়েছিল যে চাইলে ভারতীয়রা কী করতে পারে না। এই শহীদের শাহাদাত ভারতে সর্বদা স্মরণীয় থাকবে।
