
গতকাল, সোমবার কলকাতা, মুম্বই ও নয়ডায় তিনটি অত্যাধুনিক করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে সামিল হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এদিন বৈঠকে কলকাতা, মুম্বই ও নয়ডায় তিনটি অত্যাধুনিক করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন করে মোদী জানান, নতুন ল্যাবে দিনে ১০ হাজার করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গি, এইচআইভি-র মতো কয়েকটি রোগের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের হাতেও যদি কিছু ল্যাব দেওয়া হয়, তা হলে সরকারি হাসপাতালগুলির উপকার হবে।”
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুরুতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি অসহযোগিতা করেননি। আপনার বিরুদ্ধে কেউ একথা বলতে পারবে না। কিন্তু, কেউ কেউ করছেন। সাংবিধানিক পদে থেকেও রাজ্যের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। রাজ্য ও কেন্দ্রের উচিত এই সময়ে একসঙ্গে চলা।’
শুরু থেকেই রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,“কোভিড বা যে কোনও সমস্যায় একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করুন। গঠনমূলক যে কোনও পদক্ষেপ করা হলে কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করব।”
- ১ লা অগাস্ট বখরি ঈদ, ধর্মীয় উৎসবে লকডাউন করবে না রাজ্য সরকার, জানালেন ফিরহাদ হাকিম
- সংক্রমণ রুখতে এবার বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলিকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দিতে চলেছে রাজ্য
প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, করোনা যুদ্ধে কেন্দ্রের থেকে ১২৫ কোটি পাওয়া গিয়েছে। তবে করোনার জন্য আরও টাকার প্রয়োজন। রাজ্যর ইতিমধ্যেই আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এপ্রিল থেকে মে-র মধ্যে GST-তে রাজ্যের ভাগ বাবদ ৪১৩৫ কোটি পাওনা রয়েছে। এছাড়া আমফান তাণ্ডবের ক্ষেত্রে রাজ্য ৫ কোটি চেয়েছিল, সেখানে ১ হাজার কোটি পাওয়া গিয়েছে বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান। সামগ্রিক ভাবে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকার দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে মোট ৮১টি করোনা-ল্যাব রয়েছে, তবে আরও ল্যাব দরকার। সরকারি হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা এবং ১০৬টি সেফ হাউস, প্লাজমা ব্যাংক, নতুন কোভিড ক্লাবের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এছাড়াও রাজ্যে করোনা চিকিৎসা যে বিনামূল্যে তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তো বিশ্বকে বাংলা সম্পর্কে জানানো উচিত, যে এই রাজ্যে করোনা চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হয়।’
ভিডিও বৈঠকে মমতার আর্জি- জনসংখ্যা, জনঘনত্ব এবং ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র যেন ইতিবাচক পদক্ষেপ করে। অতিমারী পরিস্থিতিতে রাজ্যের মূল দাবি আর্থিক সাহায্য, এদিন তা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউজিসির আগের নির্দেশিকা মেনেই রাজ্য প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু ইউজিসির নতুন নির্দেশিকায় সমস্যা হবে ছাত্রদের। আমি অনুরোধ করছি এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের অসুবিধা না করে ইউজিসি যেন আগের নির্দেশিকা মানতে আদেশ দেয়’।
