করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে সমগ্র বিশ্ব আজ জর্জরিত। গত ৪ মাস ধরে এই অদৃশ্য ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষ এখন ঘরবন্দি। এ মূহুর্তে দেশে করোনায় মৃত বেড়ে ২০ হাজার ৬৪২। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮২ জনের। একদিনে আক্রান্ত ২২ হাজার ৭৫২। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশে আক্রান্ত বেড়ে ৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৪১৭। তবে, বেড়েছে দৈনিক সুস্থতার সংখ্যা। মোট সংক্রমণ-মুক্ত ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮৩১ জন। তবে আশার কথা, দেশে মৃত্যুর হার কমে ২.৭৮ শতাংশ। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৬১.৫৩ শতাংশ। এ বিষয়ে ভবিষ্যতের পরিস্থিতি কী রূপ হবে তা নিয়ে সমীক্ষা করেছে প্রখ্যাত Massachusetts Institute of Technology (এমআইটি) এর গবেষকেেরা।
সমীক্ষায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি কোনও টিকা বা ওষুধ না বেরোয়, তাহলে ভারত সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়বে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দিনে ২.৮৭ লক্ষ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এমআইটি-র হাজঘির রাহমানন্দ, টিওয়াই লিম ও জন স্টেরমান বলেছেন, রিপোর্টের পূর্বাভাস অনুযায়ী তখন আমেরিকায় দিনে ৯৫৪০০টি কেস হবে। এরপর সবচেয়ে বেশি হবে দৈনিক দক্ষিণ আফ্রিকা (২০,৬০০) ও ইরানে (১৭,০০০)। সারা বিশ্বে ৮৪টি দেশে করোনা আক্রান্ত হবেন ২৪.৯ কোটি মানুষ, মারা যাবেন ১৭.৫ লক্ষ মানুষ। টেস্টিংয়ের থেকেও কতটা সামাজিক দূরত্ব রাখা যায় তার ওপরেই আক্রান্তের সংখ্যা নির্ভর করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
- করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা নবান্নের, ৯ জুলাই বিকেল ৫টা থেকে সমস্ত কনটেনমেন্ট জোনে ফের লকডাউন জারি
- হিউম্যান ক্লিনিকাল ট্রায়ালে অনুমতি পেল ‘কোভ্যাক্সিন’, স্বাধীনতা দিবসেই মারণ অসুখের কবল থেকে দেশবাসীকে মুক্তি দিতে চাইছে কেন্দ্র
SEIR (Susceptible, Exposed, Infectious, Recovered) তথা এসইআইআর মডেল ব্যবহার করে এই সংখ্যাটি বলেছেন বিজ্ঞানীরা। এতে তিনটি ফ্যাক্টর ধরা হয়েছে। এগুলি হল বর্তমান টেস্টিং রেট ও রেসপন্স, যদি প্রতিদিন ০.১ শতাংশ করে টেস্টিং বাড়ে, তৃতীয়ত টেস্টিং যদি একই থাকে ও কন্টাক্ট রেট ৮ ধরা হয়, অর্থাৎ ১ জন আক্রান্ত মানুষের থেকে ৮ জন আক্রান্ত হতে পারে। ৮৪টি দেশের তথ্য নিয়ে এই রিসার্চ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক কম রিপোর্ট হচ্ছে। তাঁরা এও বলেছেন, হার্ড ইম্যুনিটি অর্থাৎ মানুষের শরীরে করোনা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরী হতে এখনও দেরি আছে। এই রিসার্চে যে সংখ্যা বলা হয়েছে, সেটা বিভিন্ন ফ্যাক্টরের জন্য বদলে যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
এই মূহুর্তে করোনায় মৃত্যুমিছিলের গ্রাফ বেড়েই চলেছে। দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ২৫০ জনের। আক্রান্ত ২ লক্ষ ১৭ হাজার ১২১। দিল্লিতে মৃত ৩ হাজার ১৬৫ জন, সংক্রমিত ১ লক্ষ ২ হাজার ৮৩১। গুজরাতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯৭৭ জনের, আক্রান্ত ৩৭ হাজার ৫৫০।বিশ্বে সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা আমেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি। আশঙ্কা বাড়িয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংক্রমণ। একদিনে আক্রান্ত ৬০ হাজারের বেশি। আমেরিকায় করোনা সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৬২ জনের। মোট আক্রান্ত ২৯ লক্ষ ৯১ হাজার ৩৫১।
