
আমফানের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ঝড়-বৃষ্টির দাপটে জেরবার রাজ্যজুড়ে। বজ্র বিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে। গতকালের ঝড় বৃষ্টির জেরে এখনো পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা, ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুরে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল অর্থাৎ বুধবার বিকেল থেকে বীরভূম ও তার আশেপাশে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়াতেও বৃষ্টি হচ্ছে। আজ সকাল থেকে কলকাতাতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গতকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টির সাথে জোরালো হাওয়া বইছে। আরামবাগে এর জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ির চাল উড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বেশ কিছু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। ভেঙে পড়া গাছের ডাল কাটতে গিয়ে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় বছর বিয়াল্লিশের লালমোহন রায় গুপ্তের। আরামবাগ মহকুমার গাছ চাপা পড়ে আরো তিনজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। দুর্গাপুরে মারা গিয়েছেন ১ জন। উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় মল্লিকপুরের একজন বাসিন্দার পাঁচিল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন পাঁচজন। ঝড়ের দাপটে পাঁচিল ভেঙ্গে আহতদের মধ্যে দু’জনকে কলকাতা আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঝড়ের দাপটে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ফরাক্কার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগদাবড়া ফরেস্ট। প্রায় ৭০০ টিরও বেশি গাছ ভেঙে গেছে বলে খবর পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে। গ্রামগুলিতে এখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রবল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন কৃষিকাজ। মঙ্গলবার বিকেলে ঝড় বৃষ্টির দাপটে বাগদাবড়া, বাহাদুরপুর, চাদর প্রভৃতি গ্রামের অবস্থা বেশ খারাপ। স্থানীয় সূত্রে খবর, আমফানের পর আবার এই বৃষ্টিতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকাবাসী। ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে শুরু করে। ফরেস্টের গাছ ছাড়াও আম বাগান বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
আমফান পরবর্তী প্রাক বর্ষার ঝড়-বৃষ্টির দাপটে পশ্চিমবঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত গোটা রাজ্য। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্যোগের ফলে এলাকার মানুষজন এখন যথেষ্টই আতঙ্কগ্রস্থ।
