
একদিকে করোনা আতঙ্ক তার ওপর আমফানের জেরে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ। বিধ্বংসী ঝড়ের দাপট এখনো সামলে উঠতে পারেনি দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা। এরই মধ্যে কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মতো একলাফে বাজার হয়ে উঠেছে অগ্নিমূল্য।রীতিমতো পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে সবজির দাম। সব মিলিয়ে একেবারে নাভিশ্বাস অবস্থা ক্রেতাদের।
লকডাউনের বাজারে সবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও আমফানের জেরে একধাক্কায় মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে যেখানে পটলের দাম ছিল কেজি দরে ১৫ থেকে ২০ টাকা সেখানে দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা, বেগুন ৩৫, ঢেঁড়স ২৫, কাঁচালঙ্কা ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। এছাড়া শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। লোকাল আমের দামও ৮০ টাকা কেজি। তবে স্থানভেদে দামের পার্থক্য রয়েছে। মাছ, মুরগির মাংসের দাম লাগাম ছাড়া। কাটা মুরগির মাংস ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই বাজারে গিয়ে সাধারণ মানুষের চোখ কপালে উঠছে। ফসলে বিপুল ক্ষতির কারণে মধ্যবিত্তদের পকেটেও টান পড়তে শুরু করেছে। দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ রোজগার তার ওপরে আবার অগ্নিমূল্য বাজার, সবমিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের।
- ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাজ্যের জন্য আগ্রিম ১ হাজার কোটি অর্থ সাহায্যের আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী
- নিজেই যাবেন পরিদর্শনে, বিধ্বস্ত বাংলাকে সচল করতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী,
আমফানের জেরে অধিকাংশ চাষের জমি এখনো জলের তলায়। মাঠে ধান, সবজি সবকিছুই পচে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগে অনেকেই ফসল কেটে উঠতে পারেননি ফলে জমিতেই ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছরে দীর্ঘ শীতের জন্য আম চাষে ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে আবার শিলাবৃষ্টি। হুগলি জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রের খবর অনুসারে, সিঙ্গুরে ৬৯০ হেক্টর জমি সবজি, ৮১৪ হেক্টর জমির তিল ও ১৫৩ হেক্টর জমির ডালশস্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও লিচু, পান, পাট চাষও বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন। হাওড়া জেলা কৃষি দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়ে প্রায় ১৩০০ হেক্টর জমিতে ভেঙ্গে গিয়েছে পানের বরজ; প্রায় ৪০০০ হেক্টর জমিতে সব্জির ক্ষতি হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৯০ কোটির কাছাকাছি।
আমফানের জেরে শুধু ঘর-বাড়িই নয়, জীবিকার উৎসটুকুও মানুষ হারিয়েছে। তাই সবজি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতেই বাজারের দর হয়েছে সাধারণের কাছে আকাশ ছোঁয়া। প্রায় দু’মাসের ওপর মানুষের রোজগার বন্ধ তার ওপরে সবজির দাম চড়া হওয়ায় ক্রমশ তাদের কপালের ভাঁজ স্পষ্ট হচ্ছে।
