করোনা ভাইরাসের জেরে এবার ৬২৩ বছরের ঐতিহ্যে পরিবর্তন এল রাজ্যে। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রীরামপুরের এবছরের ৬২৪ তম রথযাত্রা। আগামী শুক্রবার স্নানযাত্রা। ২৩ জুন রথ। রথযাত্রা নিয়ে মাহেশ জগন্নাথ মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের তরফে একটি বৈঠকে মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। এদিনের বৈঠকে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী জানান, “এবছরের রথযাত্রা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। স্নান যাত্রা বাইরের বেদিতে হবে না, মন্দিরের ভেতরেই করা হবে এবং ২৩ তারিখের রথযাত্রায় জগন্নাথদেব মন্দিরের বাইরে বেরোবেন না”।
গত বছরে প্রায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল রথের সময়। এই বছর করোনার আবহে একসঙ্গে এত মানুষের জমায়েত হলে তা বিপজ্জনক। এই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই মাহেশ জগন্নাথ মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই মত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলাশাসককে সঙ্গে নিয়ে মাহেশ জগন্নাথ মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা বৈঠক করেন এবং এবছরের রথযাত্রা স্থগিত রাখার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। রথযাত্রা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পুজো ও যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান রীতি মেনেই করা হবে। অভিনব ব্যাপার হলো পুণ্যার্থীদের জন্য মন্দিরের তরফ থেকে জগন্নাথদেবের পুজো, আচার অনুষ্ঠান সবকিছু সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের লাইভ করে দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে দেখানো হবে।
- বিধিনিষেধ শিথিলতার মধ্যেই ৩০শে জুন পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর সিধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভা
- পেটের টানে আজও জীবনযুদ্ধে সামিল সুন্দরবনের ‘বাঘ বিধবা’
এ বিষয়ে জগন্নাথ জিউ ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অসীম পণ্ডিত বলেন, সরকারি বিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যত কম সংখ্যক লোক নিয়ে অনুষ্ঠান হবে। সমাজ, জনগণ এবং ভক্তদের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী, পুরসভার প্রশাসক অমিয় মুখোপাধ্যায়ও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসন যে ভাবে বলবে, সে ভাবেই উৎসব হবে।’’
বৈঠক প্রসঙ্গে হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “এবছর যেহেতু পরিস্থিতিটা অন্যরকম এবং করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, সেই কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিবছর যেমন প্রশাসনের তরফে আয়োজন করা হয় এবছরও সেই একই রকম আয়োজন করা হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনেই মন্দির কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আচার-অনুষ্ঠানে আমাদের তরফ থেকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে এবং যে পরিকাঠামোগত কিছু সাহায্য লাগবে, সেটাও আমরা দেব।”
