
তৃতীয় দফায় আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল ‘কৃষিক্ষেত্রে বিপণন’- শুক্রবার এমনটাই জানালেন অর্থমন্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে যে কৃষিক্ষেত্রে বিপণন বাকি ছিল তারই সংস্কার করে কৃষিজাত পণ্যের বাধামুক্ত আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য অনুমোদনের জন্য আইন প্রণয়নের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। কৃষি ক্ষেত্রে তিনি চুক্তিবদ্ধ চাষাবাদের সুবিধার জন্য আইনি পরিকাঠামো গঠন করার কথা বলেন এছারাও মৌমাছি সংরক্ষণ আয়ুর্বেদ চাষ এবং দুগ্ধজাত পণ্যের মার্কেটিং কে উৎসাহিত করার পাশাপাশি তিনি কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্যও চেষ্টা করেছেন।
তৃতীয় দিনে অর্থমন্ত্রী সীতারামন এর ঘোষণা অনুযায়ী-
- কৃষিজাত পণ্যের বাধামুক্ত আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য অনুমোদনের জন্য আইন প্রনয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
- ফার্মগেট পরিকাঠামো, মৎস্যজীব্ গবাদিপশু পালক, শাক-সবজি চাষি, মৌমাছি পালকদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো যোগানের জন্য দেড় লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
- ১৯৫৫ সালের ‘প্রয়োজনীয় পণ্য সংস্থা আইন’কে সংশোধন করে ছয় ধরনের কৃষিজাত পণ্য যেমন- পেঁয়াজ, আলু,ভোজ্যতেল, তৈলবীজ, ডাল ইত্যাদির বিক্রয়কে নিয়ন্ত্রণ আইনের বাইরে নিয়ে আসা হবে।
- খাদ্য ঘাটতি চলাকালীন এই প্রয়োজনীয় পণ্য আইনটি ফলপ্রসূ করা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিকে সামাল দিতে এর পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। অর্থমন্ত্রীর মতে এখন এই পরিস্থিতিতে কৃষকের উৎপাদন কার্য অটুট রাখলেও তা রপ্তানির জন্য অনুমতি পায় না। যার ফলে নানান ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হয় কৃষকদের তাই এই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই কৃষকদের সুবিধার্থে উক্ত আইনের বদল আনা প্রয়োজন।
- কৃষকদের সুবিধার্থে আকর্ষণীয় মূল্যে পণ্য বিক্রি এবং বাধামুক্ত আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য এবং ই-ট্রেডিং এর সুবিধার্থে এই আইনটি কেন্দ্রীয় আইন হিসেবে কার্যকর করা হবে
- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা এবং রপ্তানিকারকরা অনিয়ন্ত্রিতভাবে মজুত করতে পারবেন
- চাষীরা মান্ডি ব্যতীত তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ফসল বিক্রি করতে পারবেন
- ২ লক্ষ ক্ষুদ্র খাদ্য সংস্থাকে ১০ হাজার কোটি টাকা সাহায্য করা হবে
- ‘দেশের ১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে আয়ুর্বেদ চাষ করা যেতে পারে’ এমনটি দাবি করেন অর্থমন্ত্রী। ঔষধি চাষের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৪ হাজার কোটি টাকা সাহায্য করা হবে, এবং আয়ুর্বেদ চাষে চাষিরা ৫ হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন।
- মৌমাছি পালনের উন্নয়নে ৫০০ কোটি টাকা সাহায্যের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে ফল-সবজি পরিবহন ও মজুতে ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে
অর্থমন্ত্রী তৃতীয় দফার ঘোষণায় কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ মনোনিবেশ করেছেন। কৃষি সমবায়, কৃষি উৎপাদন এবং কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে কৃষি এবং খাদ্যদ্রব্য বিপণনের সুবিধার জন্য ক্লাসটার নির্মাণের কথা তিনি ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও তিনি পুরনো কিছু প্রকল্পের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যেমন প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা এবং প্রাণী সম্পদ বিকাশে নতুন করে ৩৩ হাজার কোটির তহবিল দেওয়ার কথা বলেছেন।
