
আজ, রাখি বন্ধন উত্সব। করোনা সংক্রমণের ভয়ে স্বাভাবিক ভাবেই এর প্রভাব পড়েছে রাখি বন্ধন উত্সবেও। এমন দিনে মিষ্টির চাহিদা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু এবছর করোনার জেরে বড় ধাক্কার সম্মুখীন মিষ্টি ব্যবসা। অনুমান করা হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হবে দেশের মিষ্টি ব্যবসা। সীমান্ত সংঘর্ষের জেরে রাখি এবং কাঁচা বাজারেও বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।
মিষ্টি প্রস্তুতকারকদের জাতীয় ফেডারেশনের তরফে জানানো হয়েছে, এবছরের রাখি বন্ধন উত্সবে বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার জন্যে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে মিষ্টির বিক্রি।
ফেডারেশন অফ সুইটস অ্যান্ড নামকিন ম্যানুফ্যাকচারার্স এর ডিরেক্টর ফিরোজ এইচ নাকভি রবিবার সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, “গত বছর রাখির জন্য সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। তবে এবছর এই অঙ্ক নেমে ৫ হাজার কোটিতে নেমে আসবে বলেই আমাদের অনুমান। করোনা ভাইরাস থাবা বসানোর পর দেশ যে আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে তাতে সাধারণ মানুষের কেনার ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তারই মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং আরও কিছু রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শনিবার ও রবিবার মিষ্টির দোকান খোলা রাখা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্দ। ফলে মানুষের চাহিদা মতো মিষ্টি আগে থেকে বানিয়ে স্টক করাও সম্ভব হয়নি।”
- এক রাতে সাত শিশুর মৃত্যু হল জিম্বাবুয়ের হাসপাতালে, টুইট করে জানালেন ডাক্তার
- ‘নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি’ ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার, ৩৪ বছরের শিক্ষানীতির আমূল পরিবর্তন
নাকভির মতে সরকারের তরফে আরও খানিকটা তত্পরতা ও সহযোগিতা পেলে এই দুঃসময় দেখতে হত না দেশের মিষ্টি ব্যবসাকে। তিনি আরও জানান, রাখি বন্ধন উত্সব থেকে শুরু করে জন্মাষ্টমী পর্যন্ত বছরের ২৫ শতাংশ মিষ্টি বিক্রি হয়ে থাকে। তাঁর দাবি, অবিলম্বে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের উচিত কোনও উত্সব-অনুষ্ঠানের আগে কবে এবং কটা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করা। তাতে মিষ্টি বিক্রেতারা প্রস্তুতির সময় পাবেন।
অন্যদিকে, লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের পর দেশজুড়ে স্লোগান ‘বয়কট চায়না’র। স্বাভাবিক ভাবেই এর জের রাখির বাজারেও থাবা বসিয়েছে। জানা গেছে, এবছর শুধুমাত্র রাখির মরসুমেই ৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ চিনের- দাবী কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স এর।
সিএআইটি সূত্রে খবর, ভারতের রাখির বাজার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দখলে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকার বাজার। বাকি প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার রাখি প্রতিবছর চিন থেকে আমদানি করে ভারত।
প্রসঙ্গত,দেশে রাখির উৎপাদন বাড়াতে এবছর ১০ জুন দেশজুড়ে ‘হিন্দুস্তানি রাখি’ পালনের ডাক দেয় ব্যবসায়ী সংগঠনটি। প্রায় ১ কোটি রাখি তৈরি করে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। নজর কাড়তে তৈরি করা হয় বাহারি কারুকাজ। এজন্য এবছর চিন থেকে একটিও রাখি আমদানি করতে হয়নি বলে দাবি সিএআইটির। করোনার জেরে বিক্রি কম হলেও রাখী উৎপাদনে দেশীয় ছোঁয়ায় বাঁধা থাকবে ভাই-বোনের দৃঢ় সম্পর্ক।
